সাত তরুণের স্বপ্নের ‘রিভেরী’

August 21, 2022
Posted in Press
August 21, 2022 admin

রিভেরী পাওয়ার এন্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ। ২০১১ সালে সাত তরুণের স্বপ্ন দিয়ে গড়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠান।

মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে এই প্রতিষ্ঠান ৩৫০ জনেরও বেশি প্রকৌশলী নিয়ে বড় একটি টিম ও শক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং প্লাটফর্ম তৈরী করেছে। যারা যেকোন ধরনের জটিল প্রকল্পের/সমস্যার বাস্তবায়ন/সমাধান করতে সক্ষম।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে “রিভেরী” এখন অনন্য ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। যা রিভেরী টিম ও এর লিডারদের ভিশন, মেধা, সততা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল।

জানা যায়, রিভেরীর উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকুরীর সুবাদে একটি বিষয় লক্ষ্য করেন, বাংলাদেশে প্রচুর বিদেশী প্রকৌশলীরা কাজ করেন। মেধায়, উদ্যমে দেশীয় প্রকৌশলীরা কোনো অংশেই কম না, কিন্তু এমন কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান নেই যারা গ্রাহক পর্যায়ে সেই আস্থা অর্জন করেছে। এই আইডিয়া দিয়েই শুরু।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে দেশের বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা ৩,৩০০ মেগা ওয়াট, যা এখন প্রায় ২৫,০০০ মেগা ওয়াটেরও বেশি। এই সময় যে শুধু পাওয়ার জেনারেশনে উন্নয়ন হয়েছে তাই নয়, বরং ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন এ ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ নির্ভর প্রচুর কলকারখানা গড়ে উঠেছে।

বিদ্যুৎ খাতের এ উন্নয়নে রিভেরীর প্রযুক্তিগত অবদান রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পাওয়ার সিস্টেমের পাশে কন্ট্রোল সিস্টেম, ডিস্ট্রিবিউটেড অটোমেশন সিস্টেম, স্ক্যাডা কমপ্লেক্স গ্রিড সিনক্রোনাইজেশন ইত্যাদি অনেক জটিল প্রকৌশলী সমাধান দিয়েছে রিভেরী। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য রিভেরীর প্রযুক্তিগত যে উৎকর্ষ সাধন করেছে, তা বাংলাদেশের গর্ব বলে মনে করছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রিভারীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু প্রযুক্তিগত সমাধানই নয়, রিভেরী আন্তর্জাতিক মানের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও সুইচগিয়ার তৈরী করছে। রিভেরীর তৈরী ট্রান্সফরমার আন্তর্জাতিক ল্যাব থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এই ট্রান্সফরমার ও সুইচগিয়ারগুলো বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে দেশে বিদেশে সরবরাহ করতে সক্ষম।

এ বিষয়ে রিভেরীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আল জিলানী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল স্বাধীন, সার্বভৌম ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী বাংলাদেশ। আমরা ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও সকল মুক্তিযোদ্ধার জীবন বাজি রেখে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা তো পেয়েছি কিন্তু ভাগ্য উন্নয়নের যুদ্ধ কিন্তু থেমে যায়নি। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক দূরদৃষ্টির পাশাপাশি উনি অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে স্বাবলম্বী করতে দেশীয় উৎপাদনে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করেছেন। আমাদের সম্পদ আমাদের মানুষ আর মাটি। বাংলাদেশের জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি তৈরী, আমদানী নির্ভরতা কমানো ও রপ্তানি বাড়ানো বৈদেশিক মুদ্রা আয় ব্যয়ের যে অসামঞ্জস্যতা তা রোধ করতে পারে। সারাবিশ্বেই বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির গ্রাহক বেড়ে চলছে, আর এই চাহিদা সবসময় থাকবে। এ সেক্টরের পাশাপাশি এই খাতও আমাদের অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন দেশে আমাদের পণ্যগুলো রপ্তানি করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

রিভেরীর চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদ হোসেন বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, আর সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুল হক বলেন, এই দেশ আমাদের, এই দেশের তরুণ প্রকৌশলীদের নিয়েই আমাদের এগিয়ে যাওয়া। দেশের বাইরে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি আমরাই তৈরী করতে পারবো। আমরা প্রমাণ করতে চাই, আমরা শুধু শ্রমিক নির্ভর দেশ না; মেধা মননে আমরা কারো চেয়ে পিছিয়ে থাকবো না।

তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক বিদ্যুৎ উন্নয়নে বিস্তর ভূমিকা পালনকারী রিভেরীর আকাশ ছোয়া অগ্রগতি বর্তমান অনেক দেশীয় দালাল ও বিদেশী কোম্পানির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই রিভেরীর চলমান ও ভবিষ্যৎ কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও মাথায় রেখে কাজ করতে হচ্ছে। দেশের অদম্য অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে এমন ষড়যন্ত্র আগেও হয়েছে, আরও হতে পারে; এর মধ্যেই এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখতে হবে।